মানব-সভ্যতায় সিমেন্ট
খ্রিষ্টের জন্মের ৩ হাজার বছর আগে মেসোপটেমিয়ায় ভবন নির্মাণের জন্য সিমেন্ট তথা এই ধরনের বস্তু ব্যবহারের প্রমাণ আছে। আধুনিক সিমেন্টের শুরু মূলত ইউরোপের শিল্প বিপ্লবের সময় থেকে। ভাবতে গেলে খুব অবাক হতে হয় যে, এই মানব সভ্যতাÑ এই আধুনিক সভ্যতা দাঁড়িয়ে আছে সিমেন্টের উপর। কথাটা হঠাৎ শুনলে একটু কেমন কেমন লাগে, কিন্তু সমান্য ভাবলেই মনে হয় তাই তো, কথাটা তো একদমই সত্যি! এই যে মানুষের ঘর-বাড়ী, অফিস-আদালত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, বড় বড় নদীর সেতু সবই তো সিমেন্ট দিয়ে বানানো। এমনকি অনেক রাস্তা নির্মাণেও সিমেন্ট ব্যবহার করা হচ্ছে।
১৮১৭ সালে লুইভ্যাকেট কাদা আর চুনাপাথরের সংমিশ্রণকে নিয়ন্ত্রণ করে এক ধরনের সিমেন্ট তৈরি করেছিলেন। জেমস ফ্রস্ট-ও প্রায় ভ্যাকেটের মত একই ধরনের সিমেন্ট তৈরি করে নাম দেন ’ব্রিটিশ সিমেন্ট’ এবং ১৮২২ সালে পেটেন্টও করেন তিনি। আর বাংলাদেশে সিমেন্ট শিল্পের ইতিহাস বেশী দিনের নয়। ব্রিটিশ আমলের শেষ দিকে সরকারি মালিকানায় ”ছাতক সিমেন্ট কোম্পানি” স্থাপিত হয়েছিল। এখন আমাদের দেশে উৎপাদনে আছে ছোট-বড় মিলিয়ে ৩৪টি সিমেন্ট কারখানা।
মানুষের জীবনে সিমেন্টকে অস্বীকার করার উপায় নেই। মানুষের এই আধুনিক জীবন, তার আরাম আয়েশ, মানুষের আশ্রয় সিমেন্ট। সিমেন্টকে আশ্রয় করে, সিমেন্টকে সাথে নিয়ে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে মানুষ, মানুষের সভ্যতা। সিমেন্ট আর মানব-সভ্যতা পরস্পর প্রায় সমবয়সী।