আবাসন খাতে নিবন্ধন ব্যয় কমানোর আশ্বাস এনবিআর চেয়ারম্যানের
আবাসনে নিবন্ধন ব্যয় কমানোর আশ্বাস দিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেছেন, ১৪ থেকে ১৬ শতাংশ নিবন্ধন ব্যয় আসলেই অনেক বেশি। এ জন্য স্থানীয় সরকার এবং আইন মন্ত্রণালয়ে শিগগিরই চিঠি দেওয়া হবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) নেতারা গতকাল মঙ্গলবার চলমান প্রাক্–বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে বিভিন্ন দাবি উত্থাপন করেন। এ সময় নিবন্ধন ব্যয় কমানোর আশ্বাস দেন এনবিআর চেয়ারম্যান। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় এনবিআর সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনায় বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন রিহ্যাব সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন ও ভাইস প্রেসিডেন্ট (প্রথম) লিয়াকত আলী ভূঁইয়া।
আলোচনা রিহ্যাব সভাপতি বলেন, ফ্ল্যাট ও জমি ক্রয়ের ক্ষেত্রে কয়েক বছর ধরে ১৪ থেকে ১৬ শতাংশ নিবন্ধন ব্যয় নেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে পুরোনো ফ্ল্যাট ক্রয়ের ক্ষেত্রে আবারও নতুন ফ্ল্যাটের সমান নিবন্ধন ব্যয় করতে হচ্ছে, যা অযৌক্তিক। নিবন্ধন ব্যয় ৭ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবি জানান তিনি। এ ছাড়া তিনি নামমাত্র নিবন্ধন ব্যয় নির্ধারণ করে সেকেন্ডারি বাজারব্যবস্থার প্রচলন করার দাবি জানান।
আলোচনায় রিহ্যাব সভাপতি গৃহায়ণশিল্পের উদ্যোক্তাদের আয়কর হ্রাসের দাবি জানান। এ সময় তিনি অর্থ পাচার রোধে শর্ত ছাড়া আবাসন খাতে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ চান।
লিখিত প্রস্তাবে রিহ্যাব নেতারা বেশ কয়েকটি দাবি তুলে ধরেন। এর মধ্যে অন্যতম হলো বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে ২০ হাজার কোটি টাকার পুনঃ অর্থায়ন তহবিল চালু করা, যাতে সুদহার হবে ১০ শতাংশের কম। আয়কর অধ্যাদেশ সংশোধন করে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া। নির্দিষ্ট সময়ের জন্য মূল্য সংযোজন কর হ্রাস করা।
এ ছাড়া বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনকে তহবিল প্রদানের মাধ্যমে আবাসনে ঋণ বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান রিহ্যাব নেতারা। আবাসনের অসমাপ্ত প্রকল্পে বিশেষ ঋণের উদ্যোগ নেওয়ার দাবি উত্থাপন করেন তাঁরা। বিভিন্ন ধরনের পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের মূল্য সংযোজন কর ও উৎসে কর সংগ্রহের দায়িত্ব থেকে পাঁচ বছরের জন্য আবাসন ব্যবসায়ীদের অব্যাহতি দেওয়ার দাবি জানান রিহ্যাব নেতারা।
আলোচনায় অংশ নিয়ে রিহ্যাব নেতারা বলেন, নগরায়ণের বিকেন্দ্রীকরণ ও শহরের আশপাশের উন্নয়নের জন্য শহর এলাকায় ৫ বছর ও শহরের বাইরে ১০ বছর কর ছাড় দেওয়া প্রয়োজন। তাহলে নতুন শহর গড়ে উঠবে। পুরোনো শহরের ওপর চাপ কমবে। নামমাত্র রেজিস্ট্রেশন মাশুল চালু করে সেকেন্ডারি বাজারব্যবস্থা চালু করা হলে পুরোনো ফ্ল্যাট বিক্রি সহজ হবে।
আলোচনা সভায় রিহ্যাবের সহসভাপতি লিয়াকত আলী ভূঁইয়া বলেন, এনবিআর ও রিহ্যাবের একটি যৌথ কমিটি হয়েছিল। ওই কমিটি যে সুপারিশ করেছে, তা দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানান তিনি।
এ ছাড়া গতকাল অনুষ্ঠিত ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের প্রাক্–বাজেট আলোচনায় বাংলাদেশ ল্যান্ড ডেভেলপার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএলডিএ), বাংলাদেশ স্টিল রি-রোলিং মিলস, সিমেন্ট মিলস অ্যাসোসিয়েশনসহ বেশ কয়েকটি সংগঠন অংশ নেয়।
রিহ্যাবের সৌজন্যে, স্বত্ব প্রথম আলো
0