আয় বাড়লেও মুনাফা কমেছে ক্রাউন সিমেন্টের
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সিমেন্ট খাতের কোম্পানি ক্রাউন সিমেন্টের মুনাফা কমেছে। কোম্পানিটি চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে ১৭ কোটি টাকা কর–পরবর্তী মুনাফা করেছে। গত বছরের একই সময়ে মুনাফা করেছিল প্রায় ২৩ কোটি টাকা। সেই হিসাবে গত বছরের প্রথম তিন মাসের তুলনায় এ বছরের প্রথম তিন মাসে ক্রাউন সিমেন্টের মুনাফা ৬ কোটি টাকা বা ২৬ শতাংশ কমে গেছে।
গত সোমবার কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় চলতি ২০২৩–২৪ অর্থবছরের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করা হয়। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মাধ্যমে আজ মঙ্গলবার তা বিনিয়োগকারীদের জানানো হয়েছে। ওই প্রতিবেদন থেকেই কোম্পানিটির মুনাফা কমার এ তথ্য পাওয়া গেছে।
কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের চেয়ে বেশি আয় করার পরও কোম্পানিটির মুনাফা কমেছে। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে ক্রাউন সিমেন্ট ৯১৬ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। গত বছরের একই সময়ে ব্যবসা করেছিল ৭৯৯ কোটি টাকার। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ক্রাউন সিমেন্টের ব্যবসা বা আয় বেড়েছে ১১৭ কোটি টাকা বা প্রায় ১৫ শতাংশ। ১৫ শতাংশ বেশি আয় করেও কোম্পানিটির মুনাফা গত বছরের চেয়ে ২৬ শতাংশ কমে গেছে। আর্থিক প্রতিবেদনেই মুনাফা কমে যাওয়ার একটি তথ্য উল্লেখ করেছে কোম্পানিটি। সেটি হচ্ছে কোম্পানিটির আর্থিক খরচ বা ব্যাংকঋণ বাবদ খরচ চলতি বছরের তিন মাসে অনেক বেড়ে গেছে। এর ফলে ভালো ব্যবসা করেও ভালো মুনাফা করতে পারেনি কোম্পানিটি।
আরো পড়ুনঃ স্ক্যান মাল্টি পারপাস সিমেন্ট আনলো স্ক্যান সিমেন্ট
ক্রাউন সিমেন্টের প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে কোম্পানিটির ঋণের খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৮ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ১৫ কোটি টাকা। সেই হিসাবে দেখা যাচ্ছে, ঋণ বাবদ কোম্পানিটিকে গত বছরের চেয়ে ৩৩ কোটি টাকা বেশি খরচ করতে হয়েছে, যা তার মুনাফা কমিয়ে দিয়েছে।
ক্রাউন সিমেন্টের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছরের জুলাই থেকে ব্যাংকঋণের সুদ হার বাড়তে শুরু করেছে। বড় অঙ্কের কাঁচামাল আমদানিনির্ভর যেসব শিল্প রয়েছে, ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে এসব শিল্প খাতকে কাঁচামাল আমদানি করতে একদিকে বেশি অর্থ ঋণ করতে হচ্ছে। তার জন্য গুনতে হচ্ছে বেশি সুদ। ডলারের মূল্যবৃদ্ধি ও ঋণপত্র খোলার ক্ষেত্রে মার্জিন সুবিধা কমিয়ে দেওয়ায় সিমেন্টসহ অনেক ভারী শিল্পে চলতি মূলধন ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এ ঘাটতি পূরণে কোম্পানিগুলোকে আগের চেয়ে বেশি ঋণ করতে হচ্ছে। যার প্রভাব মুনাফায় পড়ছে।
এদিকে চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে মুনাফা কমলেও চলতি অর্থবছরের জুলাই–মার্চ সময়কালে অর্থাৎ ৯ মাসে কোম্পানিটির মুনাফা পৌনে তিন গুণ বেড়েছে। গত জুলাই–মার্চ শেষে কোম্পানিটির মুনাফার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮৮ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৩২ কোটি টাকা।
0