নরসিংদীতে নতুন সিমেন্ট কারখানা নির্মাণ করছে কনফিডেন্স গ্রুপ
নরসিংদীতে নতুন সিমেন্ট কারখানা নির্মাণ করছে কনফিডেন্স গ্রুপ
রাজধানী ঢাকার কাছে একটি নতুন সিমেন্ট কারখানা নির্মাণে ৮১৫ কোটি টাকা বিনিয়োগের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম সংস্থা কনফিডেন্স গ্রুপ। মূলত কোম্পানির ব্যবসা সম্প্রসারণের পাশপাশি ঢাকা-কেন্দ্রিক সিমেন্টের বাজার দখল করাই এই বিনিয়গের উদ্দেশ্য।
নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ডাঙ্গাতে কনফিডেন্স সিমেন্ট ঢাকা লিমিটেডের নতুন কারখানাটি নির্মাণ করা হচ্ছে। সংস্থাটির কর্মকর্তারা আশা করছেন, ১৮ লক্ষ টন বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন এই প্ল্যান্টটি আগামী বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে উৎপাদনে যাবে।
১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে মিড-টেক ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য তৈরির সাথে জড়িত এই গ্রুপ। চট্টগ্রামের সিমেন্ট বাজারের একটি বড় অংশের ওপর দখল রয়েছে এর অঙ্গপ্রতিষ্ঠান কনফিডেন্স সিমেন্ট লিমিটেডের।
কনফিডেন্স সিমেন্টের ভাইস-চেয়ারম্যান ইমরান করিম জানান, “চট্টগ্রামের সিমেন্ট মার্কেটে আমাদের শক্তিশালী উপস্থিতি রয়েছে, তবে ঢাকাভিত্তিক বাজারে সেটি নেই। ঢাকা ও এর আশপাশের বাজারে আমাদের উপস্থিতি বাড়াতে এই নতুন কারখানা স্থাপন করা হচ্ছে।”
সংস্থাটির পরিকল্পনা অনুযায়ী, কনফিডেন্স সিমেন্ট ঢাকা লিমিটেডের ফ্যাক্টরিতে মোট প্রাক্কলিত ব্যয়ের ৭০ শতাংশের যোগান আসবে ঋণ থেকে এবং বাকি ৩০ শতাংশের ইক্যুইটি থেকে। অর্থাৎ, নতুন বিনিয়োগের জন্য গ্রুপটি ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ৫৭০.৭০ কোটি টাকা ঋণ নেবে। ১৮ মাস মরাটরিয়াম পিরিয়ডসহ এই ঋণের মেয়াদ হবে সাড়ে ৭ বছর।
কনফিডেন্স সিমেন্ট ঢাকা লিমিটেডকে সিন্ডিকেশনের মাধ্যমে ঋণ দেবে ব্যাংকগুলো; এই সিন্ডিকেশনের নেতৃত্বে থাকবে (লিড দেবে) ব্যাংক প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড।
আরো পড়ুনঃ ব্যয় বাড়ছে পদ্মা সেতু প্রকল্পের
রাষ্ট্রায়াত্ত্ব সোনালী ব্যাংক ইতোমধ্যে সিন্ডিকেটের সদস্য হিসাবে ১৫০ কোটি টাকা ঋণ প্রদানের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গতমাসে অনুষ্ঠিত বোর্ড সভায় এই প্রস্তাব অনুমোদন করেছে ব্যাংকটি। আরও কয়েকটি ব্যাংক বাকি অর্থের যোগান দেবে, তবে কোন কোন ব্যাংক কী পরিমাণ অর্থায়ন করবে, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি।
কনফিডেন্স গ্রুপের কর্মকর্তারা জানান, ঢাকার বাজার ধরতে নতুন কারখানা নির্মাণে ইতোমধ্যেই প্রায় ২০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে গ্রুপ। মেশিনারিজ আনতেও খোলা হয়েছে এলসি, যা ক্রমান্বয়ে আসছে।
ঢাকার অদূরে নতুন সিমেন্ট কারখানা গড়ে তোলার প্রসঙ্গে ইমরান করিম বলেন, “দেশের পুরনো সিমেন্ট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে আরও আগেই ফ্যাক্টরি থাকা উচিত ছিল, কিন্তু করা হয়নি; যার জন্য এখন নতুন ফ্যাক্টরি করা হচ্ছে।”
ডলার সংকটের মধ্যে নতুন মেশিনারিজ আনতে সমস্যা হচ্ছে কিনা- এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ডলার সংকট শুরুর আগে বিশেষ করে যখন ডলার সংকট চরমে পৌঁছেনি, তখনই এলসি খোলা হয়েছে। সিমেন্ট কারখানার কিছু মেশিনারিজ চলেও এসেছে। বড় বড় কিছু মেশিনারিজ আসতে বাকি, সেগুলোও চলে আসবে।”
“ঢাকার বাজারে ইতোমধ্যে বিভিন্ন ব্রান্ডের সিমেন্ট জায়গা করে নিলেও এই বাজার ধরতে নতুন প্লেয়ার হিসেবে আমাদের তেমন কোনো সমস্যা হবে না। কারণ ঢাকার বাজারে আমাদের তেমন কোনো প্রেজেন্স নেই। কাজেই বাজার যতটা ধরতে পারা যায়, সেটাই বড় অর্জন হবে,” যোগ করেন তিনি।
0